৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে চা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে বিশেষ সাক্ষাতকারে 'বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠন' এর সভাপতি খায়রুন আক্তার দৃকনিউজকে বলেন, "আমরা তো আমাদের পেটের দায়ে রাস্তায় নামছি। কোনো রাজনীতির জন্য নামি নাই, কারো বিপক্ষে নামি নাই। এই স্বাধীন বাংলাদেশে কেন আমরা বাঁচার মতো বাঁচতে পারব না?"
খায়রুন বলেন, চাপের মুখে কোনো কোনো নেতা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি থেকে পিছিয়ে গিয়েছেন। আন্দোলনরত শ্রমিকদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই ধর্মঘট প্রত্যাহার করে কাজে ফিরতে বলেছেন। তবে সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ সকল চা বাগানের চা শ্রমিকরা এই আন্দোলনে রয়েছেন বলে জানান এই শ্রমিক নেতা। আরও জানান, শুধুমাত্র সরকারের সাথে বৈঠকে যোগ দেয়া প্রথম সারির নেতারাই এখন তাদের পাশে নেই।
এমন বাস্তবতায় 'বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন' এর কেন্দ্রীয় নেতারা তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বলে মনে করছেন আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা। একইসাথে দালালি করে দেশের সকল চা বাগানের চা শ্রমিকদের এই আন্দোলন দমানো যাবে না বলেও জানান চা শ্রমিক আন্দোলনের এই নেতা।
প্রশাসন বা সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আন্দোলন বন্ধ করতে বলছেন উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন করেন, "আপনারা যদি জানেনই আন্দোলন বন্ধ করলেই সবকিছু সমাধান হয়ে যাবে, তাহলে প্রথমেই আমাদের আন্দোলন করা থেকে বিরত রাখতেন, বলতেন আমাদের দাবি আদায় করে দেবেন।" খায়রুন আক্তার বলেন, "এখন কারো ওপর কোনো ভরসা নাই। কেননা এতদিন ধরে আন্দোলন করছি কোনো এমপি, মন্ত্রী এসে আমাদের সান্ত্বনা দেয় নাই। তাহলে এখন কীভাবে বিশ্বাস করবো?"
আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে 'বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠন' এর এই সভাপতি জানান, ৩০০ টাকা মজুরির দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছেড়ে চা বাগানে ফিরবেন না চা শ্রমিকরা।
আরো পড়ুন
গণমাধ্যমে চা শ্রমিক আন্দোলনের উপস্থাপন
লাক্কাতুরা চা বাগান: আলোর পাশে অন্ধকার
চা শ্রমিকের গান
'মুল্লুক চলো' আন্দোলনের ১০১ বছর
চা শ্রমিক আন্দোলনে গোয়েন্দা তৎপরতা কেন?
প্রজন্মান্তরে যেভাবে দাস বানানো হয় চা শ্রমিকদের