শুক্রবার ২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ Friday 5th December 2025

শুক্রবার ২১শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২

Friday 5th December 2025

প্রচ্ছদ

গাজা প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ‘শেইম’ বললেন ড. শহিদুল আলম

২০২৫-১০-১১

দৃকনিউজ প্রতিবেদন

গাজা প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ‘শেইম’ বললেন ড. শহিদুল আলম

গাজা গণহত্যাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের কড়া সমালোচনা করলেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলোকচিত্রী ও লেখক ড. শহিদুল আলম। পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পক্ষে বাংলাদেশ যেভাবে দাঁড়িয়েছে তা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের জন্য অনুকরণীয় বলে মনে করেন দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আলোকচিত্রী ও লেখক ড. শহিদুল আলম। রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে, শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, দৃক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তিনি।

 

এর আগে গাজার পথে ভূমধ্যসাগরে দখলদার ইসরায়েলের বেআইনি আটক থেকে মুক্ত হয়ে, তুরস্কের ইস্তানবুল থেকে শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০২৫, ভোর পৌনে পাঁচটায়, রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। ঢাকায় ফিরেই শহিদুল আলম বলেন, “আমাদের আসল সংগ্রাম এখনও বাকি আছে। যতদিন না পর্যন্ত ফিলিস্তিন মুক্ত না হবে, আমাদের এই সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।”

 

শহিদুল আলম মিডিয়া ও দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, “আমি গিয়েছি কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমি আপনাদেরকে সাথে নিয়ে গিয়েছি। যেভাবে আপনারা সমর্থন করেছেন, যে ভালোবাসা দেখিয়েছেন, সেটা অসাধারণ। বাংলাদেশ যেভাবে সাড়া দিয়েছে এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে বাংলাদেশ দেখিয়েছে যে আমরা কী ধরনের ভূমিকা রাখতে পারি।”

 

অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে শহিদুল বলেন, “আমাদের চীফ অ্যাডভাইজর (প্রধান উপদেষ্টা) ড. মুহাম্মদ ইউনূস যেভাবে সাড়া দিয়েছেন, শক্তিশালী ও জোরালো ভূমিকা রেখেছেন এটাও অসাধারণ। কারণ এই বাঘা বাঘা দেশগুলোর নেতারা কিছু বলেননি।”

 

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতি তিনি বলেন, “এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের জন্য আপনারা নিশ্চয়ই দেখছেন। প্রথমত, আমার বলা উচিত ‘শেইম অন ইউ’। ‘শেইম অন ইউ’ কারণ আপনারা (পশ্চিমা গণমাধ্যম)  গণহত্যার সাথে জড়িত। ‘শেইম অন ইউ’ কারণ আপনারা (পশ্চিমা গণমাধ্যম) গণহত্যায় সহায়তা করছেন এবং মদদ দিচ্ছেন। এবং ‘শেইম অন ইউ’ গাজাগামী এই ফ্লোটিলায় যোগ না দেয়ার জন্য, অথচ এটি একটি প্রমাণ করার সুযোগ ছিল যে আপনারা ভিন্ন। তবে ভবিষ্যতের ফ্লোটিলাগুলিতে যোগদান করা, আপনাদের এই আচরণের পরিবর্তন, নিজেদের অবস্থানের পুনর্নির্মাণ করা এবং ইতিহাসে সঠিক পক্ষে থাকার সুযোগ এখনও আছে।”

 

এই দুঃসাহসিক যাত্রায় যোগ দিতে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছেড়েছেন শহিদুল আলম। এরপর গত ৩০ সেপ্টেম্বর ইতালি থেকে  ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনে'র (এফএফসি) উদ্যোগে ‘কনশেন্স’ জাহাজে চড়ে প্রায় ১০০জনসহ গাজার অভিমুখে রওনা হন। গত বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫, ভূমধ্যসাগরে গাজাগামী ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের জাহাজগুলো আটক করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখান থেকে শুরুতেই অপহৃতদের ইসরায়েলের আশদদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে দেশটির কেৎজিয়েত কারাগারে বন্দী রাখে ইসরায়েলি বাহিনী। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় তুরস্ক হয়ে আজ শনিবার ভোরে ঢাকায় পৌঁছান আলোকচিত্রী ও লেখক ড. শহিদুল আলম।

 

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দৃকের পরিচালক, নৃবিজ্ঞানী ও লেখক রেহনুমা আহমেদ। দৃকের জিএম ও কিউরেটর এএসএম রেজাউর রহমান ও ডেপুটি জিএম মো. কামাল হোসেন। সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক তানজিম ইবনে ওয়াহাব।