নারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’র আন্দোলন
নারী অধিকার রক্ষা, ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের প্রতিবাদে ২০২০ সালের অক্টোবরে যাত্রা শুরু করে নারী শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’। সম্প্রতি ১৮৭২ সালের ‘সাক্ষ্য আইন সংশোধন ২০২২’ এ নতুন সংযোজন ১৪৬ (৩) উপধারায় পুনরায় ভিকটিমের চরিত্রহননের সুযোগ বহাল থাকায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’। নারীর প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর আন্দোলন নিয়ে দৃকনিউজের সাথে কথা বলেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’র অন্যতম সংগঠক প্রাপ্তি তাপসী।
প্রাপ্তি তাপসী বলেন, সম্প্রতি ‘সাক্ষ্য আইন’ সংশোধন এনে ভিকটিমের চরিত্রহননের আর সুযোগ নেই বলে সরকারের পক্ষ থেকে যে দাবি তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি আরও জানান, রাষ্ট্রের নাগরিকদের বোকা মনে করছে সরকার, যা মেনে নেয়া হবে না।
সংশোধনীতে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ এর (৪) ধারাটি বাতিল করা হয়েছে। যে ধারায় কেউ ধর্ষণের অভিযোগ করলে আসামিপক্ষের অভিযোগকারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ ছিলো। তবে লক্ষ্য করা যায় এটি বাতিল হলেও নতুন সংযোজন ১৪৬ এর (৩) উপধারায় পুনরায় চরিত্রহননের সুযোগ রাখা রয়েছে। এতে বলা আছে, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ভিকটিমের চরিত্র এবং শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে।
আইনের ফাঁকফোকর বিদ্যমান রেখে সরকার পক্ষ থেকে অপপ্রচার চলছে উল্লেখ করে ‘শেকল ভাঙার পদযাত্রা’র প্রতিবাদে শামিল হয়েছে বিভিন্ন নারী অধিকার ও নারীবাদী সংগঠন। আন্দোলনকারীদের মতে, খুন, ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিভিন্ন অভিযোগ থেকে ক্ষমতাসীনদের পার পাইয়ে দেয়ার লক্ষ্যে বিতর্কিত ধারা বহাল আছে।
ধর্ষণের সংজ্ঞা পরিবর্তন, রেইপ শিল্ড ল’ তৈরি করা এবং সাক্ষ্য আইনের বিতর্কিত ধারা বাতিলসহ ১২ দফা দাবিতে প্রতিবছর এক গভীর রাতে সংসদ ভবনের অভিমুখে পদযাত্রা জারি রেখেছে এই সংগঠনটি।