দেশে চিকিৎসা বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে হুমকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ। আইন উপেক্ষা করে বর্জ্য পুনর্ব্যবহারের নামে বিক্রি হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য। ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে একটি আইন প্রণীত হলেও এর বাস্তবায়ন দৃশ্যমান হয়নি। কোনো ধরনের সুরক্ষা বলয় ছাড়াই চিকিৎসা বর্জ্য সংগ্রহ, বাছাই ও প্রক্রিয়াজাতকরণে কাজ করছেন দরিদ্র মানুষ। রেহাই পায়নি শিশু-কিশোররাও। চিকিৎসা আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থাকলেও একে অপরের ঘাড়ে চাপিয়ে দায় এড়াচ্ছেন। অনুসন্ধান বলছে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সরকারের উদাসীনতাও চরমে।
দৃকনিউজের অনুসন্ধানে জানা যায়, চিকিৎসা বর্জ্যের অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘমেয়াদে দূষিত হচ্ছে মাটি, জল ও বাতাস। ঝুঁকিতে আছেন লাখ লাখ মানুষ।
স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের নীতিমালা অনুযায়ী হাসপাতালগুলোতে হলুদ, লাল, সবুজসহ বিভিন্ন রঙের কনটেইনারে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য রাখার নির্দেশনা রয়েছে। তবে দেশের সরকারি-বেসরকারি বেশিরভাগ হাসপাতাল ও ক্লিনিক কোথাও এসব নির্দেশনা ঠিকমত মেনে চলতে দেখা যায় না।
রাজধানীর ইউনাইটেড, এভারকেয়ার, স্কয়ার ও ল্যাবএইডসহ বড় হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে হলে গুনতে হয় অস্বাভাবিক খরচ। অথচ হাসপাতাল নির্মাণ নকশায় বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক হলেও তাদের কাছেও নেই আধুনিক প্রযুক্তি। চিকিৎসাসেবার নামে ব্যবসায়িক এসব প্রতিষ্ঠান বর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা তো করছেই না, উল্টো তৈরি করছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।
ঢাকার হাসপাতালগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ বর্জ্য সংগ্রহের দায়িত্বে রয়েছে প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন। একে তো একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সম্ভব নয়। অন্যদিকে প্রিজমসহ বিভিন্ন হাসপাতালের বিরুদ্ধে বর্জ্য বিক্রির অবৈধ ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে।
এসব অনিয়ম অস্বীকার করেনি খোদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও। তবে আইন অনুযায়ী এ পর্যন্ত কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাস্তির আওতায় আসেনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সারাদেশে চিকিৎসা আবর্জনার সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না হলে তা খাদ্য চক্রে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে ভবিষ্যত প্রজন্মের ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে।