সাক্ষ্য আইনের সংশোধনীতেও ভিকটিমের চরিত্রহননের সুযোগ, বাতিলের দাবি উঠেছে
২০২৩-০১-২৭
ঔপনিবেশিক আমলের সাক্ষ্য আইন সংশোধন এনে সরকার দাবি করছে নারী ভিকটিমের চরিত্র নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। তবে আইনের ফাঁকফোকর বিদ্যমান রেখে সরকার পক্ষ থেকে অপপ্রচার চলছে উল্লেখ করে প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন নারী অধিকার ও নারীবাদী সংগঠন। ১৫০ বছর আগের সাক্ষ্য আইনে বিদ্যমান ভিকটিম ব্লেমিং এর সকল ধারা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাথে শামিল হয়েছেন মানবাধিকার ও নারীবাদী বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এর আগে আঠারশো ৭২ সালের ‘সাক্ষ্য আইন সংশোধন ২০২২’ গত তেসরা নভেম্বর সংসদে পাস হয়। এই সংশোধনীতে সাক্ষ্য আইনের ১৫৫ এর (৪) ধারাটি বাতিল করা হয়েছে। যে ধারায় কেউ ধর্ষণের অভিযোগ করলে আসামিপক্ষের অভিযোগকারীর চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ ছিলো। তবে লক্ষ্য করা যায় এটি বাতিল হলেও নতুন সংযোজন ১৪৬ এর (৩) উপধারায় পুনরায় চরিত্রহননের সুযোগ রাখা রয়েছে। এতে বলা আছে, আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে ভিকটিমের চরিত্র এবং শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে।
অর্থ্যাৎ ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে প্রকৃত অর্থেই আইন সংশোধন হয়েছে কিনা সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে। আন্দোলনকারীদের মতে, খুন, ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিভিন্ন অভিযোগ থেকে ক্ষমতাসীনদের পার পাইয়ে দেয়ার লক্ষ্যে এই ধরনের সংশোধন এবং বিতর্কিত ধারাগুলো বহাল রাখা হয়েছে।
যৌন সম্পর্কে সম্মতি-অসম্মতির বিভিন্ন ধরন এবং লিঙ্গীয় সমতার লক্ষ্যে আইন প্রণেতাদের সংবেদনশীল হওয়ার তাগিদ জানিয়েছেন আইনজীবীরা। ভুক্তভোগীর চরিত্রহননের সকল ধারা-উপধারা বিলুপ্ত করে সাক্ষ্য আইনের পুনরায় সংশোধনের পাশাপাশি প্রতিবেশি ভারতের মতো ‘রেইপ শিল্ড ল’ তৈরি করে বাস্তবায়নের দাবি তুলেছেন নারী অধিকারকর্মী ও সচেতন নাগরিক সমাজ।
যৌন নিপীড়নের অপরাধের বিচার প্রসঙ্গে ভিকটিমের চরিত্রকে সামনে আনার মতো অসম্মানজনক আইনের বিরোধীতা করছে এই নতুন প্রজন্ম। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মতে দেশে নারীবাদ ও মানবাধিকার রক্ষায় হেঁটে যেতে হবে আরও বহুদূর।