বৃহঃস্পতিবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০ Thursday 28th March 2024

বৃহঃস্পতিবার ১৪ই চৈত্র ১৪৩০

Thursday 28th March 2024

প্রচ্ছদ প্রতিবেদন

জার্মান কূটনীতিক পড়লেন উন্মুক্ত ম্যানহোলে, বেহাল দশায় ঢাকাবাসী

২০২২-১১-২২

দৃকনিউজ প্রতিবেদন

  

 

গতকাল সকালে টুইট করেছেন ঢাকায় জার্মান দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন জান জানোস্কি। রাতের বেলা ম্যানহোলে পরে তার পা ভেঙেছে। অতিশয় বিনয়ী ভদ্রলোক জানিয়েছেন ঢাকা শহরকে তিনি ভালোবাসেন, কিন্তু জানতেন একদিন-না-একদিন, কোন-না-কোন ঢাকনা খোলা ম্যানহোলে পড়ে যাবেনই তিনি। তার আশঙ্কাটি সত্যি প্রমাণিত হয়েছে।

 

এর কয়েকঘণ্টার মাঝেই ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর মেয়র আতিকুর তাকে উত্তর দিয়েছেন। মেয়র তার প্রতি দুঃখ প্রকাশ করে উন্মুক্ত ম্যানহোলটির অবস্থান জানতে চেয়েছেন, যাতে তিনি সেটাকে ঠিক করে ফেলতে পারেন! আমরা জানি না জার্মান দূতাবাস ঢাকার বুকে ওই নির্দিষ্ট ম্যানহোলটির অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ ইতিমধ্যে ঢাকার মেয়রকে অবগত করেছে কি না।

 

এটা হয়তো মেয়রের দায়িত্বশীলতার পরিচয়, তিনি স্বয়ং জানতে চেয়েছেন কোথায় এই ভাঙা ম্যানহোল আছে! কারও কাছে এটা মনে হতে পারে দায়িত্ব পালনে অক্ষমতা, মেয়র জানেন না কোথায় কোথায় ম্যানহোল উন্মুক্ত। এই প্রশ্নও আসে, বাংলাদেশের যে কোন একজন নাগরিক এই অভিযোগটি করলে আদৌ উত্তর পেতেন কি না। টুইটারহীন সাধারণ মানুষের অভিযোগ কিভাবে পৌঁছাবে মেয়রের কাছে? ধরাই যাক হাসানের কথা। আমরা দেখছি ঢাকার রায়েরাজারের মেয়রের আওতাধীন আজিজ খান সড়কের এলাকার একটি পথ উপচানো সড়কের দৃশ্য।

 

এলাকাবাসী জানালেন, মেয়র কখনো আসেননি, কমিশনার বাড়ি হাঁটার দূরত্বে। কিন্তু এই হাসানই ভরসা এলাকাবাসীর। রোগজীবানু ভর্তি মলমূত্রের ভেতর নেমে ম্যানহোল পরিস্কার করেন বলেই রাস্তায় অন্তত চলাফেরাটা করা যায়। এই অভিযোগ এলাকাবাসী বহুবার করেছেন। দৃকনিউজে এটা নিয়ে একটি ছবি দেয়া হয়েছে ১২ নভেম্বর। কিন্তু মেয়র কোন সাড়া দেননি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনও এদিক থেকে আলাদা কিছু নয়। এখন আপনারা দেখছেন জুরাইনের ৫২ নং ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার শিশু কবরস্থান গলির একটি দৃশ্য।

 

তিতাস গ্যাস পাইপের লিকেজ সারার পর এ অবস্থায় রাস্তা পরে আছে মাস খানেক ধরে। গর্তটি প্রায় (১২-১৫ ফুট গভীর)। নভেম্বরের ৬ তারিখ এখানে একটি শিশু পরে গিয়েছিল। শুনুন শিশুটির বাবার সেদিনের কথা কথা:এই ভয়াবহ উন্মুক্ত গহবর আজও ঠিক করা হয়নি। মেয়ররা সাধারণ নাগরিকদের অভিযোগকে হয়তো গুরুত্ব দেয়ার প্রয়োজন মনে করেন না। গোটা ঢাকা শহরই ধীরে ধীরে একটি মস্তো বড় উন্মুক্ত ম্যানহোলে পরিণত হচ্ছে কি না, আমরা জানি না। আমারা চাই ঢাকাবাসীর সম্মিলিত কণ্ঠস্বর যেনো ঢাকা শহরকে যারা চালাবার দায়িত্ব নিয়েছেন, তাদেরকে বাধ্য করতে পারে নগরবাসীর অভিযোগ শুনতে।

 

ঢাকাকে সুস্থ রাখা দরকার কেবল বিদেশীদের কাছ থেকে নিজেদের লজ্জায় পরাটাকে থামাতে নয়, যারা এই শহরের পথে পথে হাঁটেন, যাদের শ্রমে ও উৎপাদনে এই্ শহরটা চালু থাকে, এই শহরটাকে তাদের জন্য বাসযোগ্য রাখতেও শহরটাকে নিরাপদ করা প্রয়োজন। গুলশান থেকে জুরাইন, সকল মানুষেরই অধিকার আছে নিরাপদের রাস্তায় পা ফেলবার।

Your Comment